প্রত্যয় নিউজডেস্ক :সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত কাজী জাফরের দেখানো রাজনীতির পথে তার মেয়ে জয়া এগিয়ে আসবে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কাজী জাফরের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২৯ আগস্ট) এক ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
‘ইতিহাসে সমুজ্জ্বল কাজী জাফর আহমেদ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনাটি সঞ্চালনা কাজী জাফরের মেয়ে কাজী জয়া আহমেদ।
কাজী জাফর আহমেদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টিসহ তাকে আমাদের জোটে আনার জন্য কাজ করছিলাম। সেই সময়ে কয়েক দফা আমাদের সভা হয়েছে। প্রথম যে সভাটা উনি আমাদের ম্যাডামের সঙ্গে করতে গেলেন সেটা খুব স্মরণীয়। তখন সরাসরি ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করাটা তার জন্য বিপজ্জনক ছিল। কারণ দলীয়প্রধান ও অন্যান্যরা জানতে পারলে তার ক্ষতি হতে পারে। এজন্য তিনি বললেন যে, আমি ছদ্মবেশে যাব।’
তিনি বলেন, ‘এখনো আমার মনে আছে, তিনি আবদুল্লাহ ভাইয়ের বাসায় ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন। আমি যখন প্রথম দেখলাম তাকে চিনতে পারিনি। আসকান পরা, মাথায় টুপি, মুখে দাঁড়ি। আমাকে বললেন, কী? চিনতে পারছ?। আমার বেশ কিছুসময় লাগছে চিনতে। এরপর গাড়ি বদল করে ম্যাডামের বাসায় গিয়েছিলাম। জাফর ভাইকে সেদিন ম্যাডামও চিনতে পারেননি। ম্যাডাম বললেন, কাকে নিয়ে এলেন? উনাকে কিন্তু চিনতে পারছি না।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘জাফর ভাই অসাধারণ নেতা ছিলেন। তার একটা মেমোরি ছিল, একটা অসাধারণ ক্ষমতা ছিল মানুষকে আপন করে নেয়ার এবং নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবার। আমাদের কাছে নায়ক ছিলেন, হিরো ছিলেন। সত্যি উনি একেবারে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকতেন।’
কাজী বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র আখ্যায়িত করে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘উনি সবসময় উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো রাজনীতিতে বিচরণ করেছেন। তিনি যখন ছাত্ররাজনীতি করেছেন সকলের সামনে অ্যাট্রাক (আকৃষ্ট) করেছে, তিনি যখন শ্রমিক রাজনীতিতে গেলেন সেখানে কিংবদন্তি শ্রমিক নেতা ছিলেন, শ্রমিক নেতা হিসেবে সফল হয়েছিলেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কাজী জাফর আহমেদ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। শেষ সময়ে তিনি বলেছেন, আমি যেতে চাই মানুষের ভালোবাসা নিয়ে। উনার একটাই লক্ষ্য ছিল-সমাজকে বদলে দেবেন, রাষ্ট্রকে বদলে দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন।’
তিনি বলেন, ‘তাকে আমার প্রায় মনে পড়ে। আজকাল তাকে মিস করি। তার অনুপস্থিতিটা আমি অনুভব করি। আজকে যখন আমরা এই একটা অবস্থার মধ্যে পড়েছি, সেই অবস্থায় কাজী জাফরের প্রয়োজন ছিল।’
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, প্রবাসী শিক্ষাবিদ আতিকুর রহমান সালু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের প্রধান খোন্দকার লুতফুর রহমান, জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।